শিল্পক্ষেত্রে সুরক্ষিত স্বাস্থ্যসেবায় মোবাইল অ্যাপসের গুরুত্ব বিষয়ে ‘ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা অ্যাপস ও সুরক্ষিত সমাজ’ শীর্ষক কর্মশালা ও কো-ডিজাইন সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ঢাকা ক্লাবে নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় (ইউকে), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলাদেশ) এবং অ্যাপ্লাইড ইন্টেলিজেন্স ও ইনফরমেটিক্স ল্যাব (AII LAB) এর আয়োজনে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
গবেষণা অনুযায়ী সুপারিশকৃত ডাক্তার-নার্স-টেকনিশিয়ান অনুপাত হল ১ঃ৩ঃ৫, তবে বাংলাদেশে বর্তমান অনুপাত হল ১ঃ০.৪ঃ০.২৪। সে হিসেবে বাংলাদেশে ৯০ হাজার ডাক্তার, ২ লাখ ৭৩ হাজার নার্স এবং ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার প্রযুক্তিবিদ প্রয়োজন।
কিন্তু বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অনুপাত গ্রামীণ এবং দূরবর্তী স্থানে বাস করে, যেখানে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলি প্রায়শই দুর্গম। তবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে মোবাইল হেলথ (mHealth) সংক্রান্ত বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে।
এরমধ্যে রয়েছে বিনামূল্যে টেলিকনসালটেশন, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি। কিন্তু বাংলাদেশের শিল্পখাতের কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষায় মোবাইল ভিত্তিক কোন উদ্যোগ স্বাস্থ্য খাতে এখনও কাঙ্ক্ষিত ফল আনতে পারেনি।
সেমিনারে নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সেমিনার কো-অরডিনেটর ড. মুফতি মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে মোবাইল অ্যাপ এর মাধ্যমে ডাটা প্রাইভেসি বজায় রেখে একটি সুরক্ষিত স্বাস্থ্য সেবাখাত তৈরিতে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে আমরা এই খাতের নানা সুরক্ষার দিকগুলো তুলে ধরতে চাই। মূলত এই সেমিনার আমাদের দেশের শিল্পকর্মীদের স্বাস্থ্য সেবা সুরক্ষা করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কিভাবে সচল রাখা যায় তা নিয়ে কর্ম পরিকল্পনা তৈরিতে সরকারকে সাহায্য করবে।”
সেমিনারে বাংলদেশের মোবাইল সেবাখাতে কি কি চ্যালেঞ্জ আছে তার সার্বিক দিক নিয়ে একটি প্রাণবন্ত প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক এম শামীম কায়সার।
পরবর্তীতে সকাল ১১ টায় ডিজিটাল স্বাস্থ্য এর নানা চ্যালেঞ্জ, সম্যসা ও নীতিগত ফ্রেইমওয়ার্ক নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা হয়। আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সারোয়ার মোরশেদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম আল মামুনের সঞ্চালনায় এই প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন-ক্রাউন সিমেন্ট গ্রুপের জিএম এবিএম আবু ইউসুফ আলি খান, জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড এর চিফ পিউপিল অফিসার শারমিন সুলতানা, নিউজবাংলা২৪.কম এর বার্তা প্রধান সঞ্জয় দে, ন্যাশনাল হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক আবুল হাসান মাহমুদ বাসার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাকির হোসেন, প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের ম্যানেজার খালেদা পারভিন রুমা, আইসিডিডিআরবি এর এমিরেটাস বিজ্ঞানী মোঃ সিরাজুল ইসলাম, সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এন এম ফিরোজ কামাল এবং বিজিএমই এর প্রোডাক্টিভিটি ও ইনোভেশন সেন্টারের ইন্ডাস্ট্রি ইঞ্জিনিয়ার আবু আনসারী।
সেমিনার পরবর্তী একটি কো-ডিজাইন সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি থেকে আগত অংশীদারগণ অংশগ্রহণ করেন এবং ডিজিটাল স্বাস্থ্য নিয়ে নীতিগত সীমাবদ্ধতা, অ্যাপ ব্যাবহার দক্ষতা, মোবাইল সেবার সহজলভ্যতার নানাদিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডায়ানা ফ্রস্ট এর সার্বিক সহযোগিতায় কো-ডিজাইন সেশনে অংশ নেন পোশাক শিল্প-কারখানা কর্মী, সফটওয়ার ইন্ডাস্ট্রি ইঞ্জিনিয়ার, গণমাধ্যমকর্মী, স্বাস্থ্য সেবাখাতের অংশীগণ, রিসার্স অর্গানাইজেশনের বিজ্ঞানী, হোটেল ও পর্যটন শিল্পের কর্মীগণ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।